লাইলাতুন নিসফে মিন শাবান বা শবে বরাত
লাইলাতুন নিসফে মিন শা’বান (মধ্য শাবানের রাত)। আমাদের অঞ্চলে শবে বরাত নামে পরিচিত। এ রাতটির মর্যাদা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তবে এ রাতের মর্যাদাকে শবে কদরের মতন মনে করা অনুচিত।
এ রাতটিতে করণীয় কাজসমূহ
– তওবা-ইস্তেগফার করে আল্লাহ পাকের দরবারে খাঁটিভাবে ক্ষমা চাওয়া
– সাধ্যমতন নফল ইবাদত করা (কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়মে নয়; দু রাকআত করে নফল নামায — যার যতটুকু সহজ ও সম্ভব, দরূদ পাঠ, তাসবীহ-যিকির, তেলাওয়াত ও দোআ করা)
– শিরক ও হিংসা থেকে পুরোপুরি খাঁটি তওবা করে তাওহীদ ও সৌহার্দ-সম্প্রীতির দিকে ফিরে আসা
কোথায় ইবাদত করব
নফল ইবাদতের উত্তম স্থান হল নিজ বাসা-বাড়ি। নিজের বাড়িতে ঘরের কোণে অন্যান্যদের বিরক্ত না করে নফল ইবাদত করতে হবে।
একটি বর্ণনা ও এ সম্পর্কিত দিক-নির্দেশনা
বান্দার আগামী এক বছরে রিযিক ও কাদের মৃত্যু হবে — আল্লাহ তাআলা এসব ফিরিস্তি দায়িত্বশীল ফেরেস্তাগণকে এ রাতে দেন — এ সম্পর্কিত বর্ণনা প্রসঙ্গে মুফতী তাকী উসমানি দামাত বারাকাতুহুম বলেন: এমন একটি বর্ণনা রয়েছে যা বেশ দুর্বল। তবে যেহেতু আছে তাই আমরা যেন নিজের রিযিকের প্রশস্ততার জন্য এ রাতে দোআ করি।
শবে বরাত কেউ না মানলে..
আর যারা বলেন যে, শবে বরাত বেদ’আত, শরীয়তে শবে বরাতের কোনো ভিত্তিই নেই ইত্যাদি — তাদের সাথে আমাদের কোনো ধরণের তর্ক-বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হওয়া অনুচিত। আলেমগণ যদি তাদের সঙ্গে কথা বলেন অথবা এ প্রসঙ্গে লেখেন — সেটিকে মাধ্যম বানিয়ে স্বপক্ষে বা বিপক্ষে সাধারণ মানুষদের বাদানুবাদ বা কলহ তৈরি করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে।
সবাই যা জানি
সবাই ইতিমধ্যে অন্যান্য বিষয় যেমন, পটকা-বাজি ফুটানো, হালুয়া-রুটি তৈরি বা বিতরণ, বিশেষ কায়দায় ইবাদত, সারারাত মসজিদে ও কবরস্থানে সমাগমকে জরুরি মনে করা — এগুলো সবই যে শরীয়ত বিরোধী কাজ — জানে ও মানে। বহু পূর্ব থেকেই এসব ব্যাপারে সতর্ক করা হচ্ছে। তবে মনে রাখতে হবে, এগুলো হচ্ছে বলে শবে বরাত বেদআত, বা এ রাতে কোনো ইবাদত শরীয়তে প্রমাণিত নেই — এ জাতীয় কথা বিশ্বাস করা, বলা ও প্রচার করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কথা!
সর্বশেষ কথা
যাহোক, কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে সত্যের বিরুদ্বাচরণের চেষ্টা করার পরিণতি যেমন ভয়াবহ, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে মিথ্যার প্রতিরোধ বা দমনও কখনো সুন্নাহসম্মত পন্থা নয়!
এজন্য আমরা এ প্রসঙ্গে আমাদের সবার মুরুব্বী ও এ যুগের বরেণ্য আলেমে-দ্বীন মুহতারাম মাওলানা আবদুল মালেক দামাত বারাকাতুহুম-এর লেখাগুলো ও মারকাযুদ দাওয়ার তত্ত্বাবধানে এই লেখাগুলো সবাইকে পড়তে ও তদনুযায়ী আমল করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন।
Last Updated on February 25, 2024 @ 1:00 pm by IslamInLife বাংলা