আমলনামা ডান হাতে পাওয়ার জন্য প্রস্তুতি হোন আজই
بسم الله الرحمن الرحيم
يَا أَيُّهَا الإنْسَانُ إِنَّكَ كَادِحٌ إِلَى رَبِّكَ كَدْحًا فَمُلاقِيهِ (٦)فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ (٧)فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا (٨)وَيَنْقَلِبُ إِلَى أَهْلِهِ مَسْرُورًا (٩)وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ وَرَاءَ ظَهْرِهِ (١٠)فَسَوْفَ يَدْعُو ثُبُورًا (١١)وَيَصْلَى سَعِيرًا (١٢)إِنَّهُ كَانَ فِي أَهْلِهِ مَسْرُورًا (١٣)إِنَّهُ ظَنَّ أَنْ لَنْ يَحُورَ (١٤)بَلَى إِنَّ رَبَّهُ كَانَ بِهِ بَصِيرًا (١٥
অর্থ: হে মানুষ! তুমি নিজ প্রতিপালকের কাছে না পৌঁছা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিশ্রম করে যাবে, পরিশেষে তুমি তাঁর সাথে সাক্ষাত করবে। তারপর যাকে ডান হাতে তার আমলনামা দেওয়া হবে। তার থেকে তো হিসাব নেওয়া হবে সহজ হিসাব। এবং সে তার পরিবারবর্গের কাছে ফিরে যাবে আনন্দ চিত্তে। কিন্তু যাকে তার আমলনামা দেওয়া হবে পিঠের পিছন দিক থেকে। সে মৃত্যুকে ডাকবে। সে প্রজ্বলিত আগুনে প্রবেশ করবে। পূর্বে সে তার পরিবারবর্গের মধ্যে বেশ আনন্দে ছিল। সে মনে করেছিল, কখনোই (আল্লাহ তাআলার কাছে) ফিরে যাবে না। কেন নয়? নিশ্চয়ই তার প্রতিপালক তার উপর দৃষ্টি রাখছিলেন। সূরা ইনশিক্বাক: ৬ – ১৫
আল্লাহ তাআলার কথাগুলো সুস্পষ্ট। কেয়ামতের দিনের হিসাব-নিকাশের চিত্র অঙ্কিত হয়েছে আয়াতে কারীমগুলোয়। কুরআন মাজীদের প্রতিটি আয়াত গভীর চিন্তার!
কেয়ামতের দিন। যেদিন আমাদের সবাইকে আবার জীবিত করা হবে। হিসাবের দিন। জিজ্ঞাসিত হব, কে কী করেছি পার্থিব জীবনে?
কুরআন ও হাদীস অনুযায়ী সে দিনটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আজ তো দুনিয়াতে জন্মের দিন, বিয়ের দিন, চাকুরির দিন – এসব দিন গুলিকে আমরা খুব বেশি গুরুত্ব দেই! অথচ সেই দিনটি, যেদিন মানুষ তার পার্থিব কৃতকর্মের বিনিময় পাবে – সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ! অথচ আমাদের কাছে তা অবহেলিত। আমরা দিনে একটিবারও যদি গুরুত্ব দিয়ে সে দিনটির কথা একটু ভাবতাম, আল্লাহ পাকের ফযলে আমাদের পার্থিব ও পরকাল সুন্দর হয়ে যেত।
পৃথিবীতে যত মানুষ জন্মেছে, সবাই কেয়ামতের দিন উলঙ্গ হয়ে আল্লাহ তাআলার সামনে দাঁড়াবে। মানুষকে তার আমলনামা দেওয়া হবে। মানুষ আশ্চর্য হয়ে দেখবে যে পার্থিব জীবনের প্রতিটি কথা ও কাজ তাতে লিপিবদ্ধ রয়েছে। মানুষ দেখবে তার সর্দারি-মাতব্বরি, প্রভাব-প্রতিপত্তি সব শেষ। আল্লাহ তাআলার আদেশ-নিষেধ মান্যকারীরা সফল — সেদিন তা প্রকাশ পাবে। প্রকৃত সফলতা কিসে সেদিন সবাই বুঝতে পারবে। আখেরাত অস্বীকারকারীদের শোচনীয় অবস্থা হবে। চির-ক্ষমতাবান যে সত্ত্বা, মহাশক্তিশালী ও মহাপরাক্রমশালী সৃষ্টিকর্তা যিনি, তিনি সেদিন পর্দা উন্মোচন করে দিবেন। মানুষ হাক্বীকত অর্থাৎ, বাস্তবতা অবলোকন করবে। দুনিয়াতে মানুষ আনন্দে মত্ত হয়ে আল্লাহ তাআলাকে ভুলে যায়। দুনিয়াতে মানুষ কিছু সুযোগ পেয়ে অনেক বেশি অহংকার করে বসে। কেয়ামতের দিন এগুলির হিসাব দিতে গিয়ে সে হতভম্ব হয়ে যাবে! অথচ আজ আমাদেরকে বার বার সতর্ক করা হচ্ছে।
এক বুজুর্গ এজন্যই বলেছেন: “মানুষ দুনিয়াতে হাসতে হাসতে আজ নাজায়েয কাজ করছে। তাকে কাঁদতে কাঁদতে দোজখে যেতে হবে…”
আমরা সময় ও সুযোগ থাকতে জীবনকে সঠিক কাজে লাগাই। আল্লাহ! তুমি আমাদের তাওফীক দাও। আমীন।
_________________________________________________
* সূরা হাক্কাহ’তে আছে: পাপিষ্ঠদের আমলনামা বাম হাতে দেওয়া হবে (৬৯: ২৫)। কোনো বিরোধ নেই, কারণ বোঝা যাচ্ছে – পাপিষ্ঠদেরকে পেছন থেকে বাম হাতে দেওয়া হবে (আল্লাহ আমাদেরকে ডান হাতে আমলনামা দিন! আমীন)।
Last Updated on December 6, 2023 @ 7:58 am by IslamInLife বাংলা