ঈমান ও আক্বীদা

মুমিনের অবস্থা বিস্ময়কর – ১

মুমিন ব্যক্তির অবস্থা বলতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন (অর্থ): মুমিনের কাজগুলো বিস্ময়কর! কারণ তার প্রতিটি অবস্থায় কল্যাণ রয়েছে। আর এটি শুধু মুমিনের ক্ষেত্রেই। সে সুখের সময় আল্লাহ তাআলার শোকর করে থাকে। অতএব, এতে সে কল্যাণপ্রাপ্ত হয়। আর যদি সে কোনো কষ্টে পড়ে তাহলে সে সবর করে থাকে, এতে সে কল্যাণপ্রাপ্ত হয়। মুসলিম

একজন মুমিনের জন্য এটি অনেক বড় একটি সুসংবাদ! এটি দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী পরীক্ষার জীবনে চলার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ ও দিকনির্দেশনা। প্রিয় রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর প্রতিটি কথাই এরকম, যদি আমরা একটু চিন্তা করি।

এ হাদীসটিতে মুমিনের এমন গুণাবলীর কথা বলা হয়েছে যা তাকে সফলতার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে দেয়! এই গুণ মুমিনের মাঝে কেন বা কিভাবে এসেছে? সামান্য চিন্তা করলেই সেটি বোঝা যায়।

একজন মুমিনের দৃঢ় বিশ্বাস এটিই যে, আল্লাহ আমার মালিক। তাঁর আদেশ শিরোধার্য। আমার ইচ্ছা, চেষ্টা-প্রচেষ্টার কার্যকর ফলাফল আল্লাহ তাআলারই দান-অবদান! অতএব, আমার জন্য নির্ধারিত সবকিছু আমি সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নিলাম। এই ‘মেনে নেওয়া’ অবস্থাসমূহের মধ্যে যেমন আছে আনন্দ-সুখ-সমৃদ্ধির অবস্থা, তেমনই রয়েছে বিপদাপদ-দুঃখ-কষ্ট। যেমন রয়েছে আমার মন যেটি চায় সেই অবস্থা, তেমন রয়েছে আমার মন যা চায় না সেই অবস্থা। আমি যেটা চাইনি, আমার মালিক সেটি চেয়েছেন। এতেই একজন মুমিনের শান্তি! তার দৃষ্টি হল, আল্লাহ তাআলা তাঁর জন্য কোনটা চাইল সেই দিকে। এই দৃষ্টি কত উন্নত! কত শ্রেষ্ঠ!

দুটি বিষয় প্রতিটি মুমিনের মনে রাখা উচিত।

এক. আমার তামাম ইচ্ছা ও চেষ্টা আল্লাহ পাকের পথে হতে হবে।

দুই. আমি জানি না কীসে আমার প্রকৃত কল্যাণ।

উপরের কথা দুটিকে এভাবে বলা যেতে পারে, তুমি আল্লাহর পথে চেষ্টা করে যাও, আর যাবতীয় ফলাফল তাঁর ওপরই ছাড়!

যখনই মুমিন এভাবে চিন্তা করবে তখন আল্লাহ তাআলার ওপর ভয়, ভালোবাসা, আশা, ভরসা বাড়বে। আর এটিই হওয়া উচিত। মুমিনের মূল ভরসাস্থল আল্লাহ তাআলাই। জীবনের চিন্তা ও কাজে এটি যত বেশি নিয়ে আসা হবে তাতেই সার্থকতা ও সফলতা নিহিত!

সবাই কাউকে না কাউকে খুশি করতে চেষ্টা করে। আর কারো জন্য না হোক, আমরা অনেক কাজ নিজের খুশির জন্যও করে থাকি। মুমিনের সব কাজের মূল খুশির পাত্র সুমহান আল্লাহ সুবহানু ওয়া তাআলা। কেবল আমি খুশি হব বা অমুক খুশি হবে বলে মুমিন কাজ করে না। মুমিন সবার আগে দেখে, কোনো কাজে আল্লাহ তাআলা খুশি হবেন নাকি নারাজ।

একই কারণে, কোনো অবস্থা সামনে এলে, মুমিনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা মোতাবেকই হয়ে থাকে। অতএব, সুখ-সমৃদ্ধি-আনন্দের সময় সে আল্লাহ তাআলার শোকর করে। বিপদাপদ, কষ্টে সে সবর করে।

Last Updated on May 11, 2023 @ 2:23 pm by IslamInLife বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *