কুরআন

হেদায়াতের নিদর্শন

কারো অন্তর ইসলামের জন্য ‘খুলে গেলে’ তার জীবনে দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তি ও আখেরাতের আকর্ষণ ও চিন্তা এসে যায়।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ رضي الله عنه থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ একদিন এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন যার মর্ম এই: আল্লাহ তাআলা যাকে হেদায়েত ও পথ প্রদর্শন করতে চান, তার বক্ষকে ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করে দেন (সূরা যুমার: ২২)। আয়াতটি তেলাওয়াত করার পর এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি ﷺ বললেন (অর্থ): ঈমানের নূর কারো অন্তরে প্রবেশ করলে সে অন্তর প্রশস্ত হয়ে যায়। জিজ্ঞাসা করা হল কোনো লক্ষণ আছে কি, যার দ্বারা এটি বোঝা যায়? তিনি ﷺ উত্তর দিলেন (অর্থ): হ্যাঁ (তা হল) প্রতারণার বাসস্থান (অর্থাৎ, দুনিয়ার আনন্দ কোলাহল) থেকে মন উঠে যাওয়া, আখেরাতের চিরস্থায়ী বাসস্থানের প্রতি আগ্রহী হওয়া এবং মৃত্যুর পূর্বেই মৃত্যুর প্রস্তুতিতে লেগে যাওয়া। (অর্থাৎ, তওবা-ইস্তেগফার, গুনাহ বর্জন এবং ইবাদতের আধিক্যের মাধ্যমে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা।) বায়হাকী

ব্যাখ্যা: মর্ম এই যে, আল্লাহ তাআলা তাঁর যে বান্দাকে বন্দেগির (ইবাদতের) বিশেষ স্তরে উন্নীত করে ধন্য করতে চান, সে বান্দার অন্তরে এক বিশেষ নূর এবং আল্লাহমুখী আকর্ষণ সৃষ্টি করে দেন। যার দ্বারা বান্দার অন্তর খাঁটি বান্দাসুলভ জীবন গ্রহণের উন্মুক্ত হয়ে যায়। এর ফলে তার জীবনে দুনিয়াবিমুখতা, আখেরাতের চিন্তা, আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সাক্ষাত এবং জান্নাতের আকাঙ্ক্ষা ও প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। এসব লক্ষণাদির মাধ্যমে এ বিষয়টি জেনে নেওয়া যায় যে, এ বান্দার ভাগ্যে ঐ বিশেষ নূর জুটে গিয়েছে এবং ঐশী প্রেরণা তার অন্তরে স্থান করে নিয়েছে।

শায়খ মানযূর নুমানী رحمة الله عليه -এর মা’আরিফুল হাদীসের দ্বিতীয় খন্ড ‘কিতাবুর রিকাক’ থেকে সংগৃহীত।

Last Updated on June 4, 2022 @ 11:19 am by IslamInLife বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *