সময়ানুবর্তিতা – ৫
আল্লাহ তাআলা আমাদের বলছেন:
يَـٰٓأَيُّہَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَلۡتَنظُرۡ نَفۡسٌ۬ مَّا قَدَّمَتۡ لِغَدٍ۬ۖ
অর্থ: হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং প্রত্যেকেই ভেবে দেখুক আগামী কালের জন্য সে কী অগ্রিম পাঠিয়েছে।
আখেরাত আগামী কালই এবং তার জন্য অগ্রিম কিছু (অর্থাৎ, নেক আমল) আজই এই হায়াতে থাকতেই পাঠাতে হবে। এর চেয়ে উত্তম উপায়ে পার্থিব হায়াত তথা সময়ের মূল্য বোঝানো কার সাধ্য?! আল্লাহ যেন বলছেন, বান্দা! একটু দেখ যে আগামীকালের জন্য আজ তুমি কী পাঠালে? আমাদের উচিত প্রতি রাতে একটি বার এই আয়াত সামনে রেখে ‘আগামী কালের জন্য আমি আসলে কী পাঠালাম’ এটা চিন্তা করা। তাহলে অন্তত অনুশোচনা করা ও নেক আমল করা সহজ হবে ইনশাআল্লাহ। আর কিছু না হলেও অন্তত একটি সময় নির্ধারিত হয়ে যাবে এই ফিকিরের জন্য এবং মুহাসাবার (অর্থাৎ, আমলের হিসাব-নিকাশের) পথ খুলে দেবে। উমর رضي الله عنه এর সেই প্রসিদ্ধ কথা, মীযানের পাল্লায় তোমার আমল ওজন করার আগে তুমি দুনিয়াতেই নিজ আমলকে ওজন করে নাও।
সময়ের গুরুত্বের আলোচনা যত দীর্ঘই করা হোক (বর্তমানে আমাদের গাফলতির অবস্থায়) তা যেন খুবই কম। কবির কথাই এখানে প্রযোজ্য:
নসীহত করছি বার বার, শোন যেন একটি বার।
এই উম্মতের গড় হায়াত ৬০-৭০ বছর। হাজার বছর হায়াত পেত এমন উম্মত দুনিয়াতে ছিল। কিন্তু শত বছরের হায়াত প্রাপ্ত মানুষ খুঁজে পাওয়াও আজ কঠিন।
দীর্ঘ নেক হায়াত সৌভাগ্যময় এবং দীর্ঘ গুনাহে লিপ্ত হায়াত বড় দুর্ভাগ্যের।
এক সমসাময়িক বুযুর্গ চমৎকার বলেছেন: জীবনের ভিসা বড় বিস্ময়কর। যে কোন সময় এর মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। কাকে কতদিন দুনিয়াতে অবস্থানের ভিসা দেয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ অজানা। এই হায়াতের সময় সীমা বাড়ানো কখনই সম্ভব নয়।
যা হয়ে গেছে, হয়েছে, হয়ে যাক,
হাতে যতটুকু সময় থাকে থাক,
সামনে চল পবিত্র হয়ে পাক,
হঠাৎ আসবে তোমার ডাক।
——————————————————————-
*সকাল বেলাও অন্তত একবার এ চিন্তা করলে আরও উত্তম, আজ আমি (ইনশাআল্লাহ) অগ্রিম কী পাঠাব আগামী কালের জন্য? অর্থাৎ, ঈমানদার সারাদিন যাই করবে সবই আখেরাতের তৈরির উদ্দেশ্যে করবে।
Last Updated on November 20, 2023 @ 7:57 am by IslamInLife বাংলা