কুরআনতারাবীহ

২০তম তারাবীহ: ২৩তম পারার মর্মার্থ

বাইশ নং পারার শেষে সেই তিনজন বিশেষ দূতের আলোচনা বিগত হয়েছে যাদেরকে আল্লাহ তাআলা জনৈক সম্প্রদায়ের হেদায়েতের জন্য পাঠিয়ে ছিলেন। কিন্তু তারা হেদায়েত গ্রহণ করেনি। জনপদবাসী যখন প্রেরিতদেরকে মিথ্যা সাব্যস্ত করছিল তখন “হাবীব নাজ্জার” নামের এক ব্যক্তি দৌঁড়ে এসে বললেন, ও আমার জাতি! সাবধান, এই প্রেরিতদেরকে কোনো ক্ষতি করলে তোমাদের সর্বনাশ হয়ে যাবে, তোমাদের প্রতি আল্লাহর আযাব নেমে আসবে। তোমরা এদের অনুসরণ করো, এতেই তোমাদের কল্যাণ। হাবীব নাজ্জার যখন তার জাতিকে বুঝালেন এবং সবার সামনে নিজের ঈমানের ঘোষণা দিয়ে দিলেন তখন লোকেরা তার উপর হামলে পড়ল এবং তাকে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিল। শাহাদাতের পর হাবীব নাজ্জার জান্নাতে প্রবেশের সৌভাগ্য লাভ করেন। ঈমানদারদের জন্য প্রস্তুতকৃত আল্লাহর নায-নেআমত দেখে তার যবান থেকে বেরিয়ে আসে, “হায়, আমার জাতি যদি জানতে পারত আমার রব আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং আমাকে মর্যাদাবানদের অন্যতম করেছেন।” (২৭)

সাইয়্যেদুনা ইবনে আব্বাস রা বলেন, এই মুমিন লোকটি দুনিয়ায় জীবিত থাকাবস্থাতেও নিজ জাতির কল্যাণকামী ছিল এবং মৃত্যু পরবর্তী জীবনেও।

এরপর আল্লাহ তাআলা বান্দাদের ব্যাপারে আফসোস করে বলছেন, যখনই কোনো রাসূল তাদের কাছে আসেন তারা তাঁকে নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করে। (৩০

উল্লেখিত বিষয়গুলো ছাড়াও সূরা ইয়াসীনের গুরুত্বপর্ণ বিষয়গুলো হল:

*আল্লাহ তাআলার অস্তিত, একত্ববাদ ও কুদরতের চাক্ষুস দলীল উপাস্থাপন করা হয়েছে। কুরআনে এ কথাগুলো বারবার আলোচিত হয়েছে, যাতে বান্দা আল্লাহমুখী হতে পারে। এখানে আল্লাহকে চেনার তিনটি দলীল উল্লেখ করা হয়েছে।

এক. মৃত ভূমি যা বৃষ্টির পানিতে জীবন ফিরে পায়।
দুই. রাত-দিন এবং চাঁদ-সূর্য।
তিন. সমুদ্রে চলমান নৌযান এবং কিশতি জাহাজ।

এই প্রমাণাদির উল্লেখ প্রসঙে সূরা ইয়াসিন এমন একটি বাস্তবতার উল্লেখ করেছে যা সম্পর্কে কুরআন নাযিল হওয়ার সময়কার লোকেরাও (হয়ত) ছিল বেখবর। ৩৬ নং আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, “মহিমময় তিনি যিনি সব কিছু জোড়ায় জোড়ায় তৈরি করেছেন, মাটিতে যা উাৎপন্ন হয় তার এবং মানুষের নিজেরদের এবং যে সবকিছুর জ্ঞান তাদের নেই সেগুলোরও।”

প্রাচীনকালে মানুষের ধারণা ছিল, জোড়া জোড়া শুধু মানুষ এবং পশু পাখির মধ্যেই হয়। কিন্তু বর্তমান যুগের বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ গবেষণার পর এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, ‘যৌগিক’ এবং জোড়া জোড়ার বিষয়টি শুধু পশু পাখির মধ্যেই সীমিত নয়, বরং উদ্ভিদ, জড় পদার্থ এবং বিশ্বের প্রতিটি জিনিষেই রয়েছে তা। এমনকি বস্তুর সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম অংশ ‘এটম’ও ‘ইলেক্ট্রন’ ও ‘প্রটোন’ এ দুটি জিনিষ দ্বারা গঠিত। ইলেক্ট্রন ও প্রটোনকে নর-মাদী হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। সূরা ইয়াসিন ছাড়া সূরা যারিয়াতেও বিজ্ঞান এবং সাইন্সের এই বিষয়টি হাজারো বছর পূর্বেই বর্ণনা করে দেয়া হয়েছিল। সেখানে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে এভাবে : “আর প্রতিটি জিনিষকে আমি জোড়ায় জোড়ায় তৈরি করেছি, যেন তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো।” (৪৯-৫১)

পুরো পড়তে ক্লিক করুন: ২৩তম পারা

Last Updated on July 1, 2024 @ 3:27 pm by IslamInLife বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: you are not allowed to select/copy content. If you want you can share it