হারাম থেকে বাঁচার পথ
হারাম থেকে বাঁচার জন্য সাহস করে নিয়ত বা দৃঢ় সংকল্প করতে হবে। দেখবেন, পথ খোলার মালিক পথ খুলে দেবেন। তিনি কিভাবে পথ খুলেন…
قَالَ كَلاَّ إِنَّ مَعِيَ رَبِّي سَيَهدِينِ
অর্থ: (মূসা عليه السلام) বললেন, নিশ্চয়ই আমার সঙ্গে আমার রব আছেন। উনি আমাকে পথ দেখাবেন। (সূরা আশ শু’আরা: ৬২)
– মূসা عليه السلام তার উম্মতকে বড়ই বিপদসংকুল মুহূর্তে এই কথাটি বলেছিলেন। যখন ফেরাউন তার সেনাবাহিনী নিয়ে হযরত মূসা عليه السلام ও তার উম্মতকে ধাওয়া করছিল, যখন সামনে ছিল লোহিত সাগর।
আল্লাহ তাআলা আপন কুদরতে সমুদ্রের মধ্য দিয়ে রাস্তা খুলেছিলেন। পার করেছিলেন তাঁর রাসূলকে আর তার অনুসারীদের।
যেই আল্লাহ তাআলা সেইদিন হযরত মূসা عليه السلام ও তার উম্মতের জন্য রাস্তা খুলেছিলেন, তিনি আজও বিদ্যমান। আমাদের জন্য তিনিই রাস্তা খুলবেন।
মুফতী তাকী উসমানী আমাদেরকে একটি ঘটনা শুনিয়েছেন। এক যুবক একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করতেন। মুফতী সাহেবকে এসে জিজ্ঞেস করলেন, ইন্স্যুরেন্সে চাকরি কি হালাল নাকি হারাম? মুফতী সাহেব জবাবে তাকে জানিয়ে দিলেন তা না-জায়েয ও হারাম। তারপর মুফতী সাহেব এও বললেন যে, আপাতত আপনি করতে থাকেন। সঙ্গে জায়েয আয়ের সন্ধানে থাকুন, জায়েয আয়ের ব্যবস্থা হলে এ চাকুরি ছেড়ে দিন (এটাই আলেমগণ সাধারণভাবে বলে থাকেন যে, হঠাৎ যদি কেউ তার না-জায়েয চাকুরি/কারবার বন্ধ করতে বা ছাড়তে না পারে, সে যেন তাতে নিয়োজিত থেকে ইস্তেগফার চালিয়ে যায়। আর ‘কর্মহীন মানুষের মতন’ পাগলপাড়া হয়ে অন্য জায়েয কাজ খুঁজতে থাকে; এমনটা বলা হয় মানুষের ঈমান হেফাজতের জন্য)।
যুবকটি বললেন, আমিতো আপনার কাছে মাশোয়ারা (পরামর্শ) চাইতে আসিনি। জানতে এসেছি যে, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করলে আমার আয় হালাল হবে নাকি হারাম হবে(?)
মুফতী সাহেবের কাছ থেকে বিষয়টি জেনে তিনি তৎক্ষণাৎ চাকুরি ছেড়ে দিয়েছিলেন। আল্লাহ তাআলাও তাকে ভালো চাকুরি জুটিয়ে দিয়েছিলেন।
সাহস করে হারাম থেকে বাঁচতে হবে। গাফলতির সাথে হারাম আয়ে লেগে থাকা নিতান্ত দুর্ভাগ্যজনক। এমন যেন না হয়, এই চিন্তায় বিভোর থাকলাম, সবাই করে – আমি কেন ছাড়ব? মৃত্যু হঠাৎ করেই চলে আসবে। তখন আল্লাহ তাআলাকে এই সব বাজে-যুক্তি দেওয়ার কোনো অবকাশই থাকবে না। আখেরাতে আল্লাহ তাআলা যদি বলেন, তোমার সব সঙ্গীরা সবাই দোযখে যাচ্ছে, অতএব তুমিও যাও (নাউযুবিল্লাহ)। আমার কেমন লাগবে? সবাই অন্যায় করে তাই আমিও করতে থাকি – এ জাতীয় মানসিকতা থেকে আমরা আশ্রয় চাইব।
হারাম আয় পরিত্যাগের জন্য প্রথমেই খাঁটি অন্তরে নিয়ত করতে হবে ও বেশি বেশি দোআ করতে হবে। একজন বিজ্ঞ আলেমের পরামর্শ অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। মনে রাখবেন, আমাদের নিয়ত ও প্রচেষ্টা অনুপাতে সাহায্য আসবে। আল্লাহ তাআলাই তাঁর নেক বান্দাকে সুরক্ষা করেন; তিনি সর্বদাই দেখছেন বান্দা কী চায় আর কী করছে।
Last Updated on September 5, 2022 @ 11:57 am by IslamInLife বাংলা