রমযান: তওবা করে জীবন নবায়নের মাস
ইস্তেগফার ও তওবার উপকারিতা বলে শেষ করা যায় না। আল্লাহ তাআলা নিজে “তাউওয়াব” – অধিক ক্ষমাশীল বা বারংবার তওবা কবুলকারী। বান্দা হিসেবে আমাদের হওয়া উচিত “আউওয়াব”* – অধিক তওবাকারী। একজন বান্দা যদি “আউওয়াব” হতে পারে, তাহলে তার মাঝে কোনো গুনাহ করার উদ্রেক হলে তার তওবাই তাকে স্মরণ করিয়ে দিবে, “তুমি না ঐ ব্যক্তি, যে গুনাহ থেকে তওবা করেছ…!”
এজন্যইতো যত বারই গুনাহ হোক, তত বারই তওবা করা চাই। তওবাকারী কখনোই গুনাহ-র উপর হঠকারি নয়। সে তওবাকারী, অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলার দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। তার মর্যাদা আল্লাহ তাআলার কাছে বেশি হয়ে যায়। তার প্রতি আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ বর্ষিত হয়। এজন্যই সে পরবর্তীতে পাপ করতে ইতস্তত বোধ করে। তার মাঝে খোদাভীতি তথা তাকওয়া পয়দা হতে থাকে। এক সময়ে সে পাপ পঙ্কিলতার জীবন ত্যাগ করার তাওফীক পেয়ে যায়। আল্লাহ তাআলার মাহবুব বান্দায় পরিণত হয়।
ইতিহাস আমাদেরকে ফুযায়েল ইবনে আয়ায, হাবীব আযমী, বিশরে হাফী-র মতন হাজার-লাখো আল্লাহওয়ালাদের জীবনী শোনায়। যাদের পূর্ব জীবন অন্যরকম ছিল। তওবা তাদেরকে বিশ্ব ইতিহাসে গৌরবোজ্জ্বল স্থান দিয়েছে। আমরা পরবর্তীগণ – তাদের নাম সম্মানের সাথে নিই, নামের পর বলি – রাহমাতুল্লাহি আলাইহি।
শায়খ যাকারিয়া সাহারানপুরি رحمة الله عليه (সেই সৌভাগ্যবান ব্যক্তিবর্গের একজন, যার কবর মদীনার জান্নাতুল বাকী-তে) বলেছেন, আমাদের দ্বীন – ইসলামের মাঝে দুটি জিনিস খুব বিস্ময়কর! একটি: নিয়ত, অপরটি তওবা। আসলেই শায়খের কথাটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। শুধু নিয়তের বিশুদ্ধতা মানুষকে কোথা থেকে কোথায় পৌঁছে দেয়। আবার তওবা দ্বারা জাহান্নামের দিকে ধাবিত মানুষ মুহুর্তকালের মধ্যে কিভাবে জান্নাতের দিকে ধাবমান হয়, আল্লাহওয়ালা বনে যায়। এটা আল্লাহ তাআলার অশেষ-অগণিত কৃপা ও মহিমা।
পবিত্র রমযান তওবা করার বিস্ময়কর সুযোগ দেয়। আল্লাহর পথে অগ্রসর হওয়ার পথ উন্মোচন করে, সহজ করে। প্রতিদিন ইফতারির সময়ে অসংখ্য জাহান্নামী-কয়েদী মুক্তি লাভ করে। যে নফস আর শয়তান সারা বছর আমাদের গুনাহর দিকে ধাবিত করতে প্রয়াস পায় – তারাও বন্দী। পানাহার, স্ত্রী-গমন বন্ধ হওয়াতে নফস-ও অনেকটা কাবু হয়ে যায়।
অতএব, রমযান সূবর্ণ সুযোগ – তওবা করে জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসার।
“আউওয়াব” শব্দটি সূরা ক্বাফ-এর ৩২ নম্বর আয়াতে রয়েছে।
Last Updated on December 12, 2024 @ 8:54 am by IslamInLife বাংলা