মুমিন আত্মসমর্পণকারী
এ জগতে যা কিছু হচ্ছে আল্লাহ তাআলার হুকুম ছাড়া নয়। তাঁর নিয়ম ও নীতিই চলছে। তিনি মানুষ ও জিন জাতিকে স্বাধীনতা দিয়েছেন অর্থ এই নয় যে, জগতের নিয়ন্ত্রণ তিনি ছেড়ে দিয়েছেন। বান্দা তাঁর হুকুম মানলেও তিনি সেটা দেখছেন এবং সীমালঙ্ঘন করলে সেটাও তিনি দেখছেন। উভয় ক্ষেত্রে যে ফল সৃষ্টি হচ্ছে সেটা তাঁর সম্পূর্ণ অবগতির মধ্যেই আছে এবং ফল সৃষ্টির মালিকও তিনি। বান্দা নিয়ত ও প্রচেষ্টা অনুযায়ী পুরস্কার বা শাস্তি পাবে।
যারা আল্লাহ-কে স্বীকার করে তারা সব বিষয়ে তাঁর সাহায্য চায়। কোনো নেক কাজ করতে পারলে সেটি তাঁর দেয়া তাওফীক মনে করে। কারণ, আল্লাহ তাআলার ইচ্ছাতেই নেক কাজটি করার শক্তি, সামর্থ্য অর্জিত হয়েছে। নেক কাজ করা ও নেক পথে টিকে থাকা তাঁর ইচ্ছা ব্যতীত সম্ভব নয়। গুনাহ হলে মুমিন বান্দা নিজের গাফিলতি স্বীকার এজন্যই করে যে, আল্লাহ তাআলা-তো বলে দিয়েছেন সেটা (গুনাহ করা) তাঁর নাফরমানি। আল্লাহ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى জানিয়ে দিয়েছেন মন মতো চলা যাবে না, শয়তানের অনুসরণ করা যাবে না। সুতরাং এক্ষেত্রে আমার উচিত ছিল এ কাজটি না করা ও তা থেকে বিরত থাকা। এজন্য এখন আমি তওবা করব, ক্ষমা চাইব।
আমাদের মন (নফস) ও শয়তান এ প্ররোচনা দেয় যে, আল্লাহর প্রতি বিদ্রোহী হও (ফলে এমন চিন্তার উদ্রেক করে, আমার জীবনে এটা কেন হল, ওটা হল কেন, আমার এই দশা কেন… ইত্যাদি)। শয়তান প্ররোচনা দিক, আমাকে প্রতিরোধ এই বলে গড়তে হবে যে, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন তিনি যা-ই করেন তাতেই কল্যাণ। তাঁর সব সিদ্ধান্তে আমি সন্তুষ্ট থাকব এবং তাঁর হেকমত স্বীকার করে নিজের গুনাহর জন্য ক্ষমা চাইব। অবস্থা যত প্রতিকূলই হোক, আল্লাহ তাআলার পথেই চলব। তাঁরই সাহায্য চাইব। এমনতো নয় যে, অধৈর্য হয়ে আল্লাহ-বিমুখ হয়ে গেলে সমাধান হয়ে যাবে।
মুমিন আত্মসমর্পণকারী এজন্যই যে, তার মুনিব ও মালিকের ইচ্ছা ও হুকুমের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি সর্বদা ইতিবাচক। বরং ঈমানের বলে বলীয়ান মুমিন আল্লাহর হুকুমের সামনে সদা অবনত। ইবলিসের মত নয় যে কিনা বলেছিল, আমি কেন আদমকে সিজদা করব? সে মাটির তৈরি আর আমি আগুনের! নাউযুবিল্লাহ।
Last Updated on December 12, 2024 @ 8:49 am by IslamInLife বাংলা