ফেতনা: তার রূপ ও সে সময় করণীয়: ৪
ফেতনার যুগে সত্য-অসত্য, হক ও না-হক, ন্যায়-অন্যায় পৃথক করা কঠিন হয়ে পড়বে। ফেতনা যত বেশি হবে অবস্থা তত জটিল হবে।
হাদীসে ফেতনার যুগের যে সব আলামত এসেছে তা অধ্যয়ন করে প্রত্যেকের নিজের কাজের দিকে তাকানো উচিত। আমি কোনো ফেতনা সৃষ্টিকারী বা এর কোনো পৃষ্ঠপোষক নই তো? এটা দেখতে হবে। আমাদের নেককার পূর্বসূরিগণ নিজ সময়ের যে কোনো খারাপ কর্মকাণ্ড সর্বপ্রথম নিজের দিকে সম্বন্ধ করতেন। নিজেকে নির্দোষ মনে করতেন না। অন্যকে দায়ী করার জন্য কখনই ব্যস্ত হতেন না। এমন মনে করতেন না, মানুষ যা ইচ্ছা তাই করুক – আমি এর থেকে মুক্ত। বরং তাদের ভয় বৃদ্ধি পেত এই ভেবে যে, এটা আমার কোনো গুনাহের ফল, এটা আমার কোনো অবহেলারই পরিণাম। এবং তৎক্ষণাৎ তওবা-ইস্তেগফারে নিয়োজিত হতেন। নিজে ও সমাজকে সংশোধনের জন্য সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করতেন।
আমাদের প্রত্যেকের অনেক দায়-দায়িত্ব রয়েছে। আমরা কোনো দেশের নাগরিক, কোথাও বসবাসকারী। সর্বোপরি আমরা মুসলিম। আমাদের চিন্তা ও কাজ সংকীর্ণ হতেই পারে না। আশেপাশের মানুষ, অন্য সব প্রাণী ও পরিবেশ – সবার জন্য আমাদের প্রত্যেকেরই করণীয় আছে। প্রত্যেকের নেক প্রচেষ্টা এই বৃহৎ সমাজে যেমন কিছু না কিছু অবদান রাখে, প্রত্যেকের খারাপ কাজের প্রভাবও তেমনি কিছু না কিছু পড়েই থাকে। তাই ব্যক্তি যদি সতর্ক ও সংশোধন না হয়, সমাজ ও জাতি সংশোধিত হবে, এ আশা করি কিভাবে?
পুরো সৃষ্টি আল্লাহর পরিবার, আমি তার একজন সদস্য। আমাকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদতের জন্য এবং প্রত্যক্ষ ইবাদত নামাজ-রোযার পাশাপাশি সমগ্র সৃষ্টির প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া আমার অন্যতম দায়িত্ব। নবী-রাসূলগণ (আলাইহিমুস সালাম) অত্যন্ত ভারসাম্যপূর্ণ পদ্ধতিতে চিন্তা ও কাজ করেছেন। সেই শিক্ষা আমাদের সামনে। আমরা তো সাইয়্যেদুল কাওনাইন – দোজাহানের যিনি সর্দার, মুহাম্মাদ ﷺ এর উম্মত। আমাদের জন্য তো রয়েছে শ্রেষ্ঠ নবীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষা।
Last Updated on February 4, 2023 @ 9:30 am by IslamInLife বাংলা