আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর ইবনুল খাত্তাব রাযিআল্লাহু আনহুমা (মৃ. ৭৩ হিজরী : ৬৯৩ খৃস্টাব্দ)
যাঁর শিক্ষক স্বয়ং রাসূলে আকরাম ﷺ। যাঁর পিতা হলেন হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা.। যাঁর দৃষ্টিতে সম্পদ ছিল সামান্য সেবক, মনিব হিসেবে অর্থের বিবেচনা ছিল না। আপাদমস্তক ছিল যাঁর যুহদ ও দুনিয়াবিমুখতা। বাল্যকালে যিনি গ্রহণ করেছিলেন ইসলামের ঝিরঝিরে বাতাস। ছেলেবেলায় প্রাণভরে উপভোগ করেছিলেন সুশীতল সমীরণ। শৈশবে পেয়েছিলেন ইসলামের সুঘ্রাণ। বাবা হযরত উমরের হাত ধরে মদীনায় হিজরত করেছিলেন। বদর ও উহুদ সমর অভিযানের সময় বয়সে ছোট থাকায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাননি। পরবর্তীতে খন্দক বা পরিখা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। আর সেটাই ছিল তাঁর সর্বপ্রথম জিহাদ।
বাইয়াতে রেজওয়ানের সময় যাঁরা বৃক্ষের নিচে শপথ নিয়েছিলেন তাঁদের মাঝ হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা.ও ছিলেন। মহান মক্কা বিজয়ের সময়ও তিনি উপস্থিত ছিলেন। বাবার সাথে তাঁর খুব মিল ছিল। পিতার দানশীলতায় তিনিও সক্রিয় ছিলেন। বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল বাবার সাথে। ইসলাম তাঁকে দিয়েছিল ওহীর আলো। যে আলোয় তিনি তাঁর হৃদয়কে করেছিলেন প্রাণবন্ত। কুরাইশ তরুণদের অতি সংযত লোক। ষাট বছর ধরে যিনি ফতওয়া ও দৈনন্দিন সমস্যার সমাধান দিয়েছিলেন। ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব অর্পিত হলে তিনি তা নাকচ করে দেন। নবী ﷺ-এর সীরাত-আদর্শ ও নিদর্শনাবলী অনুসরণে পেয়েছিলেন আধ্যাত্মিক স্বাদ। সেই স্বাদে মজেছিলেন সারা জীবন। এমনকি হজ্জ্বের সফরে যাওয়ার সময় (প্রয়োজন না থাকলেও) শুধু এ জন্য গাছের নিচে বিশ্রাম নিয়েছেন যে, সেখানে রাসূলে আকরাম ﷺ বিশ্রাম নিয়েছিলেন। মহানবী ﷺ বলেছেন, (অনুবাদ) আব্দুল্লাহ্ খুব ভালো ছেলে। যদি সে রাতে নামায পড়তো! (মহানবী ﷺ-এর এমন আবেগের কথা শোনে) তিনি রাতের বেলায় খুব কম ঘুমাতেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস : ১১২২)
হযরত সাঈস ইবনুল মুসায়্যিব রহ. বলেন, কাউকে জান্নাতী বলে সাক্ষ্য দিতে পারলে আমি সাক্ষ্য দিতাম হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমরের ব্যাপারে। তাঊস রহ. বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা.-এর চেয়ে বুযূর্গ ও পরহেযগার অন্য কাউকে আমি দেখিনি। দুনিয়া ধস্তাধস্তি করে তাঁর কাছে পরাস্ত হয়েছে। জাগতিক মায়া কুপোকাত হল আর তিনি করলেন বাজিমাত। হযরত জাবের রা. বলেন, আমাদের (সাহাবা কেরাম) প্রত্যেকে কোন না কোনভাবে দুনিয়ার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন আর দুনিয়াও তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে। তবে আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. তাঁদের ব্যতিক্রম। তিনি তারস্বরে বলতেন, (অনুবাদ) সকালে উপনীত হলে সন্ধ্যার অপেক্ষা করো না। সন্ধ্যার সময় হলে সকালের অপেক্ষা করো না।
সম্মুখের ধনসম্পদের বিরুদ্ধে বিষাদগার করার জন্য জন্মেছিলেন। সবসময় অর্থকড়ি দান করে নিজেকে পরিশীলিত করতে থাকতেন। কখনও একদিনে ত্রিশ হাজার দিরহাম দান করতেন। (যার কারণে) মাসব্যাপী গোস্তের টুকরা খাওয়ার সুযোগ পেতেন না। ইশার নামায জামাতে না পড়তে পারলে সারা রাত দাঁড়িয়ে ইবাদত-বন্দেগী করতেন। ইন্তেকালের পূর্ব পর্যন্ত এক হাজার গোলাম আজাদ করেছিলেন। অতিক্রম করার সময় ছোট-বড় সবাইকে সালাম দিতেন। এতিম বা মেহমান কিংবা মিসকীন লোকদের নিয়ে খানা খেতেন।
মহানবী ﷺ-এর বাণীকে গভীরভাবে গ্রহণ করতেন। হাদীসের অনুরণন থাকতো হৃদয়জুড়ে। দারিদ্র্য ও প্রয়োজনের তাগিদ যাতে অনুভূত না হয় সেজন্য ধন-সম্পদ দান করে দিতেন। চলেছেন প্রথম মুয়াল্লিম ও প্রথম শিক্ষক মহানবী ﷺ-এর পথ। অনুসরণ করেছেন তাঁর পথ ও পদ্ধতি। সেজন্য পার্থিব চাকচিক্যের কাছে নিজেকে সঁপে দেননি। একবার এক আসরে বাইশ দিনার তাঁর কাছে এসেছিল। তিনি সেগুলো বন্টন করে সেখান থেকে উঠে আসেন। মহানবী ﷺ-এর প্রস্থান পর্যন্ত জীবনে কখনও একটা ইটের উপর আরেকটি ইট রেখে গোড়াপত্তন করেননি কোন বাসা-বাড়ির। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. একটা অভ্যাস ছিল, তাঁর সহায়-সম্পত্তির কোন কিছু অতিশয় পছন্দ হলে তিনি তা আল্লাহ ওয়াস্তে দান করে দিতেন। তাঁর ক্রীতদাসরাও এ বিষয়টা জানতো। তাদের কেউ কেউ বেশি সময় মসজিদে কাটাতো। মসজিদে ইবাদত-বন্দেগী অবস্থায় দেখে তিনি তাকে আজাদ করে দিতেন। এতে তাঁর সাথী-সঙ্গীরা বলতো, হায় আপনি করছেন? তারা তো আপনাকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য এমন ইবাদত-বন্দেগীর ভান করছে! তিনি বলতেন, যে ইবাদত-বন্দেগীতে আল্লাহ তাআলার বিষয়ে ধোঁকার আশ্রয় নিতে পারে তার থেকে আমরা প্রতারিত হতে পারি।
হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. এর রামীসা নামের এক বাঁদি ছিল। সে সুন্দরী ও সকল বিষয়ে যোগ্য ছিল। তিনি তার আচরণ ও সৌন্দর্যে মুগ্ধ ছিলেন। তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা তো ইরশাদ করছেন (অনুবাদ) ‘তোমরা যা ভালোবাসো তা হতে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনও পুণ্য লাভ করবে না।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ৯২) আমি যেহেতু তোমাকে দুনিয়ায় ভালোবাসি তাই তোমাকে মুক্ত করে দিলাম। যাও তুমি আল্লাহ ওয়াস্তে আজাদ। একবার তিনি ঠাণ্ডা পানি পান করলেন। পরক্ষণে খুব কাঁদলেন। জিজ্ঞাসিত হলেন, কেন কাঁদেন? বললেন, কুরআনের একটি আয়াতের কথা স্মরণ করে কাঁদলাম। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করছেন, (অনুবাদ) তাদের ও তাদের বাসনার মধ্যে অন্তরাল করা হয়েছে। (সূরা সাবা, আয়াত : ৫৪) বুঝে আসল যে, জাহান্নামী লোকজনের পানির জন্য যেমন বাসনা হবে অন্য কোন কিছুর জন্য তেমন বাসনা হবে না।
একদিন তাকে বলা হল, অমুক আনসারি ইন্তেকাল করেছেন। পরিত্যক্ত সম্পত্তির পরিমাণ এক লক্ষ দিরহাম। তিনি দুঃখ করে বললেন, সেই আনসারী এসব ধন-সম্পদ রেখে গেলেও সম্পদরাজি কিন্তু তাকে রেখে যায়নি। তিনি অর্থকড়ি ছেড়ে গেলেও অর্থকড়ি কিন্তু তাঁকে ছাড়েনি। একদিন হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. এর তাজা মাছ খাওয়ার ইচ্ছে হল। মদীনার কয়েক মাইল দূর থেকে ভুনা মাছ আনা হল। পাতলা রুটিসহ ইফতারের সময় দরস্তরখানায় পরিবেশন করা হল। তিনি দেখতে লাগলেন। পরে বললেন, এসব খাবার অমুক গোত্রের এতিমদেরকে দিয়ে দাও। তখন তাঁর বিবি বললেন, আপনার যে ইচ্ছে হল মাছ খাওয়ার সে ইচ্ছাপূরণের জন্য সামান্য খেয়ে নিন। অবশিষ্টাংশ এতিমদেরকে দিয়ে দিবো। তিনি বললেন, না। আমি খাবো না। এগুলো তাদের নিকট পাঠিয়ে দাও। তারা আশ মিটিয়ে খেলে আামার ইচ্ছেও পূরণ হবে।
পরকালের আগ্রহ আর অজানা আতঙ্ক সবসময় নিজের মধ্যে সক্রিয় দেখতে পেতেন। যুহদ ও পরকাল বিষয়ে প্রাধান্যের কারণে আত্মগরিমা চূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। একবার হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. এর সফরসঙ্গী হলেন জনৈক ব্যক্তি। খাবার আনলে লোকটি তা থেকে এক লোকমা খেতো। এরপর হাত মুছে ফেলতো। পানীয় আনা হলে শুধু এক ঢোঁক পান করতো। ইবনে উমর রা. লোকটিকে জিজ্ঞেস করলেন, ভাতিজা! সামান্য খেয়ে পরিতৃপ্ত কেন? পেট ভরে পানাহার করো না কেন? লোকটির চোখে পানি ছলছল করছে, সে বলল, কীভাবে পানাহার করবো? আগামীতে কোথায় হবে আমার ঠিকানা? জান্নাতে না জাহান্নামে? সে ব্যাপারে নিশ্চিত কিছু না জেনে আমি পরিতৃপ্ত হয়ে পানাহার করতে পারি না। এ কথা শোনে আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. ব্যথিত হলেন। মাথা ঝুঁকিয়ে রাখলেন। তিনিও আমৃত্যু কখনও পরিতৃপ্ত হয়ে পানাহার করেননি।
আয়্যূব ইবনে ওয়ায়েল বর্ণনা করছেন, হযরত মুয়াবিয়া রা. হতে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. এর নিকট চার হাজার দিরহাম আসল। দ্বিতীয় একজন হতে আরও চার হাজার দিরহাম আসল। তৃতীয় অন্য একজন হতে দুই হাজার দিরহাম প্রেরিত হল। কিন্ত বিস্ময়ের ব্যাপার হল, পরদিন সকালে দেখা গেল, তিনি বাজারে গেলেন। বাহনের জন্য বাকিতে এক দিরহাম মূল্যের ঘাস কিনতে চাচ্ছেন। আয়্যূব বলেন, বিষয়টি রহস্যজনক মনে হল। আমি আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. এর বাঁদিকে জিজ্ঞেস করার জন্য তার কাছে গেলাম। বললাম, তোমাকে একটা কথা বলবো। আশা করি তুমি সত্যি সত্যি বলবে। আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমরের নিকট কি গতকাল হযরত মুয়াবিয়া রা. পক্ষ থেকে চার হাজার দিরহাম অর্থকড়ি আসেনি? অনুরূপ পরিমাণ মুদ্রা আরেক ব্যক্তি হতে কি পৌঁছায়নি? সে বলল, অবশ্যই। তিনি বললেন, তাহলে আজ সকালে কেন দেখলাম তিনি বাাজারে এক দিরহাম মূল্যের ঘাস বাকিতে চাচ্ছেন? বাঁদি বলল, কসম! তিনি তো সেসব দিরহাম রাতেই দান করে শেষ করেছেন। একথা শোনে আয়্যূব বাাজরে আসলেন। উচ্চকণ্ঠে বললেন, হে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়! দুনিয়া দিয়ে কী করবে? হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. এর নিকট এই রাতে দশ হাজার দিরহাম এসেছিল। কিন্তু এসব অর্থকড়ি তিনি রাতারাতি দান করেছেন। সকালে তিনি এক দিরহামের ঘাস বাকিতে কিনতে বাাজারে গিয়েছেন।
হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. প্রত্যেক রাতে নিজের পরিবার-পরিজনের লোকজনকে দস্তরখানে নিয়ে বসতেন। এসময় কোন ভিখারি আসলে তিনি তাঁর অংশ তাকে দিতেন। তিনি সেই খাবার দস্তরখানা থেকে কিছুই খেতেন না। তিনি কুষ্ঠ রোগীদের ডেকে এনে এক সাথে খানা খেতেন। বলতেন, হতে পারে তাদের কেউ কেয়ামত দিবসে বাদশাহে পরিণত হবে। একদিন পরিবারের লোকেরা তাঁর জন্য খাবারের আয়োজন করলো। রুটি নিয়ে সেই খাবার আনা হলে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. সেগুলো দীনদরিদ্র লোকদের মাঝে বন্টন করে দিতে চাইলেন। পরিবারের লোকজন বুঝতে পেরে খাবার উঠিয়ে নিয়ে গেল। যাতে তিনি সেগুলো বিলিয়ে দিতে না পারেন। ইবনে উমর রা. বললেন, তোমরা আমাকে গরিবদেরকে আহার্য দান করা থেকে বঞ্চিত করলে। তাদেরকে খাওয়ালে আমি পরিতৃপ্ত হতাম। কসম, আজ আমি আর কোন কিছু আস্বাদন করবো না।
জনৈক ব্যক্তি একবার তাঁকে বলল, আপনার জন্য চাটনি ও হজমুলা তৈরি করবো? তিনি বললেন, সেটা আবার কী? লোকটি বলল, সেটা খেলে ভরাপেট সহজে হজম হয়। হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। ইবনে উমর রা. বললেন, কসম, আমি তো আজ চার মাস যাবৎ পেট ভরে খানাই খায়নি। আমি পেয়েছি এমন সাহাবা কেরামের কাফেলাকে যাঁরা কখনও ক্ষুধার্ত ছিলেন আবার কখনও খেয়ে পরিতৃপ্ত হয়েছিলেন। একবার এক ব্যক্তি হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. দেখলেন। তাঁর গায়ে মোটা খসখসে কাপড়। এতে লোকটির করুণা লাগলো। কোমল একটি কাপড় এনে দিলেন হযরত ইবনে উমর রা.কে। তিনি দেখলেন, কাপড়টি অনেক কোমল ও মোলায়েম। তাই তিনি সেটি গ্রহণ করলেন না। বললেন, আমার আশঙ্কা হয় এই মোলায়েম কাপড় পরিধান করলে আমার মধ্যে অহঙ্কার চেপে বসবে। আমার মাঝে গরিমা দেখা দিবে। আর আল্লাহ তাআলা তো কোন অহঙ্কারী ও দেমাগিকে পছন্দ করেন না। তাই আমি সেটা পরিধান করতে পারি না।
একবার ইসমাঈলের ঘরে চারজন লোক জড়ো হল। মুসাআ’ব, উরওয়াহ, আব্দুল্লাহ্ ইবনে যুবাইর ও আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর। তারা বললো, আর কী মনের বাসনা তা প্রকাশ করুন। আব্দুল্লাহ্ ইবনে যুবাইর রা. বললেন, আমার ইচ্ছে খিলাফত-রাষ্ট্র পরিচালনা। উরওয়াহ বললেন, আমার মনের ইচ্ছে হল আমার থেকে ইলম ও জ্ঞান আহরিত হোক। মুসআ’ব রা. বললেন, ইরাকের শাসনভার আমার কাছে ন্যস্ত করা হোক। আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. বললেন, আমার বাসনা হল, মাগফেরাত। আল্লাহ তাআলা আমাকে ক্ষমা করে দিন এটাই আমার একান্ত অভিলাষ। প্রত্যেকের মনোবাঞ্ছনা পূরণ হয়েছে। হয়তো আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমরের মাগফেরাতের ফয়সালা হয়েছে। হাজ্জাজের লোকদের পক্ষ থেকে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. এর পায়ে বর্শার আঘাত লাগে। তখন তিনি ‘হরম’ এলাকায় হাঁটছিলেন। আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তিনি বাড়িতে আবদ্ধ হয়ে পড়েন। (সংবাদ শোনে) হাজ্জাজ এসে বলল, আমি যদি জানতে পারতাম, কে আপনাকে আঘাত করেছে তাহলে তাকে আমি শিরশ্ছেদ করে দিতাম। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. বললেন, আপনি-ই আমাকে আঘাত করেছেন। হাজ্জাজ বলল, কীভাবে? তিনি বললেন, যেদিন আপনি হরম এলাকায় হাতিয়ার প্রবেশের অনুমতি দিয়েছেন সেদিন আপনি সেটা করেছেন।
হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. মৃত্যুমুখে পতিত হলে বলেছেন, কোন কিছুর উপর আমার ভরসা নেই। শুধু দুপুরের পিপাসা আর রাতের সামান্য ক্লান্তি। হিজরী ৭৩ সালে তিনি ইন্তেকাল করেন। হাজ্জাজ তাঁর জানাযা নামায পড়ান। ইবনে মুসায়্যিব বলেন, যেদিন আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. মারা যান সেদিন মহান এক ব্যক্তির তিরোধান হয়। তাঁর মারা যাওয়ার দিন তিনি ব্যতীত পৃথিবীতে দ্বিতীয় এমন কোন ব্যক্তি ছিল না যাঁর আমলের সমতুল্য আমল নিয়ে আল্লাহ তাআলার দরবারে হাজির হওয়ার বাসনা আমার ছিল। আবূ সালামা ইবনে আব্দুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. মারা গেলেন। মর্যাদা ও গুণে তিনি তাঁর পিতা হযরত উমর রা. এর মতো ছিলেন।