কুরআন মাজীদের জীবন গড়ার মাস – ২
আজ কুরআন তেলাওয়াত খুব কম করা হয়ে থাকে। আবার কিছু তেলাওয়াত করা হলে সেই তেলাওয়াতকে যথেষ্ট মনে করা হয়। আবার কুরআনের উদ্দেশ্য হৃদঙ্গম, তাঁর অর্থ বোঝায় সঠিক নীতি অবলম্বনের খুব অভাব। এভাবে কুরআন থেকে ফায়দা নেয়ার পথ আমরা নিজেরাই রোধ করছি।
কুরআন অনুযায়ী জীবন গড়াতো তখনই সম্ভব হবে যখন কুরআনের প্রাথমিক ও মৌলিক দাবি পূরণ হবে। আমরা তো প্রাথমিক ও মূল জায়গাতেই পিছিয়ে পড়েছি। আমাদের শিক্ষা-দীক্ষা জ্ঞানার্জনের শুরুই হচ্ছে বিপরীত পথে। না কুরআন সঠিকভাবে পড়া শিখছি, না কুরআনের অর্থ সঠিকভাবে বোঝার কোনো ব্যবস্থা করছি।
কত আফসোসের বিষয়। পবিত্র কুরআন পড়া ও বোঝার উদ্দেশ্য কী? আমরা তো এ কথাই বিস্মৃত হয়ে গিয়েছি।
কুরআন মাজীদ হল আল্লাহ পাকের শাহী ফরমান। জীবনকে কুরআন অনুযায়ী পরিচালনাই মূল উদ্দেশ্য। মুমিনের জীবনের সব উদ্দেশ্য যেখানে গিয়ে মিশে, এ তো সেই লক্ষ্য। কিন্তু জ্ঞানগত পর্যায়েই যখন এটা না থাকে অথবা উপেক্ষিত হয় তখন এ বাস্তবতা উপলব্ধি তো আরও দূরবর্তী ব্যাপার।
কেয়ামতের দিন কুরআন যেমন শাফাআতকারী হবে, কুরআন এ উম্মতের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীও হবে। আল্লাহ না করুন, যদি কুরআন আমাদের বিরুদ্ধে বিচার দিনে অভিযোগ করে বসে, না জানি কত ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হব আমরা। তাই এখনই সতর্ক হতে হবে। যেন কুরআনের শাফাআত গ্রহণকারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারি সেই চেষ্টা করতে হবে।
রমযান বিশেষভাবে এ চিন্তা-চেতনা জাগিয়ে জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার মাস। পবিত্র কুরআন নাযিলের এ মাসে প্রতিদিন অন্তত একটিবার কুরআন ও আমাদের জীবন নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে। পবিত্র কুরআন সামনে রেখে নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে, আমি নিজ জীবনে কুরআনকে কতটুকু আপন করতে পেরেছি? কতটুকু কুরআনের শেখানো ঈমান, ইবাদত, আখলাক, সামাজিকতা, লেনদেন আমার জীবনে বাস্তবায়ন করেছি? এ প্রশ্নের সদুত্তরই আমাকে বলে দেবে আমি কেমন মুসলিম।
Last Updated on February 4, 2023 @ 2:22 pm by IslamInLife বাংলা