ইবাদতচিন্তার খোরাক​রমযান/রোযা

পরিবর্তন আজই: এ সুযোগ আর কোনোদিন নাও আসতে পারে

রমযানুল মুবারক দ্রুত অতিবাহিত হচ্ছে।

ভাগ্যমান তারা, যারা কিনা গুনাহ থেকে বেঁছে থাকার চেষ্টা করছে। আরো বেশি ভাগ্যমান তারা, যারা কিনা গুনাহ থেকে বেঁছে থাকার সঙ্গে নেক কাজ বৃদ্ধি করেছে।

এই উম্মতের হায়াত কম কিন্তু নেকি অধিক হওয়ার অন্যতম মাধ্যম এই রমযান মাস। এতে রয়েছে সেই মহিমান্বিত কুরআন নাযিলের রাত! সেই একটি রাতই অনেক ফজিলত বহন করে — এত বেশি যে একটি রাতের ইবাদত হাজার মাসের বেশি সাওয়াব নিয়ে আসে!! কল্পনা করুন, যখন বলা হয়েছে ‘হাজার মাসেরও বেশি’ – এটি কোটি মাসেরও বেশি হতে পারে – মহান আল্লাহর পুরষ্কার অসীম হওয়া সম্ভব, আর সত্যি তা-ই হয়েই থাকে।

কোনো বড় অপরাধী, যে কিনা সুনিশ্চিত শাস্তির উপযুক্ত হয়ে গেছে, তার সামনে যখন ক্ষমা পাওয়ার কোনো সুযোগ আসে সে কি অপরাধ বৃদ্ধি করবে নাকি ক্ষমা লাভের সুযোগটি গ্রহণ করতে সচেষ্ট হবে?! নিশ্চয় যে কোনো বিবেকবান-বুদ্ধিমান ক্ষমার সুযোগটিই লুফে নেবে..

তাও কেমন ক্ষমা, চিরকাল জাহান্নাম থেকে মুক্তি!

আর মোটেই বিলম্ব নয়। এমন সুযোগ লুফে নিতে সর্বাত্মক চেষ্টা শুরু করি ইনশাআল্লাহ! আমাদের মধ্যে কে এমন গুনাহ করিনি ও আখেরাতে ভয়ানক শাস্তির উপযুক্ত হইনি?!

সাত্তার ও গাফফার সে সুপবিত্র সত্ত্বা সুবর্ণ সুযোগ দিচ্ছেন, তাঁর দানকে তিনি প্রশস্ত করে দিয়েছেন। হায়, এমন সুযোগ আর কখনো নাও আসতে পারে!

কী করা উচিত

খাঁটি তওবা।

তেলাওয়াত, দোআ-যিকির বৃদ্ধি।

লাইলাতুল কদর সন্ধান ও তাতে ইবাদতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে ফেলতে হবে।আজীবন নেক জীবন যাপনের নিয়ত করে সাধনা শুরু করে দেওয়া — এ পর্যায়ে নেক মানুষের সঙ্গ অবলম্বন, তাদের থেকে পরামর্শ গ্রহণ করে প্রতিটি পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব জরুরি।

প্রিয় নবীজী ﷺ এর সুন্নত জেনে নিয়ে আমল করতে শুরু করা উচিত।

দ্বীনের ইলম অর্জন করতে থাকতে হবে। তদনুযায়ী আমল করতে হবে — কোনো কাজ হোক পার্থিব বা ইবাদত সংক্রান্ত।

আমাদের ওপর আল্লাহ পাকের হক ও মানুষের হক কী, সেগুলো জেনে আদায়ে গুরুত্ব সহকারে কাজ করে যেতে হবে।

কোনো অবস্থায় সালাত/নামায পরিত্যাগ করা যাবে না।

হালাল আয়ে নিয়োজিত হতে হবে, হারাম আয় করা যাবে না।

আখলাক/চরিত্র সুন্দর থেকে সুন্দর করতে হবে।

আলেম ও দ্বীনদার-পরহেযগারগণের সঙ্গ কখনো ত্যাগ করা যাবে না৷

গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য সাহস করতে হবে, দোআ-যিকির ও মুহাসাবা (আমলের হিসাব-নিকাশ)’র জীবন গড়তে হবে।

প্রতিটি কাজ শুধুমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা উচিত! নিয়ত আর লক্ষ্য একটাই, আল্লাহ খুশি হোন। এর বাইরে অন্য কোনো উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য থাকা উচিত নয়। সবসময় আল্লাহর এ কথাটি স্মরণ রাখুন (প্রতিদিন একটি বার চিন্তা করা গেলে তো খুবই উত্তম!):

قُلْ إِنَّ صَلاَتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

অর্থ: আপনি বলুনঃ আমার নামায, আমার কোরবানি এবং আমার জীবন ও মরণ বিশ্ব-প্রতি  পালক আল্লাহরই জন্য। [সূরা আন’আম: ১৬২]

ইনশাআল্লাহ উপরের এ কাজগুলো করতে থাকলে ইহকাল ও পরকাল শান্তিপূর্ণ ও সফল হবে!

হে আল্লাহ! তোমার তাওফিক ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়। তুমি আমাদেরকে তাওফিক দান কর! আমিন।

Last Updated on June 30, 2024 @ 3:17 pm by IslamInLife বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: you are not allowed to select/copy content. If you want you can share it