আখলাক ও আত্মশুদ্ধিসহজ আমলচিন্তার খোরাক​

আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না

আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, মহান আল্লাহর থেকে কখনো আশা হারাবেন না (তাঁর থেকে কখনো হতাশ- নিরাশ হবেন না)।

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন:

قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ

অর্থ: বল, হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের উপর জুলুম করেছ (কুফর বা অন্য পাপ করে)! কখনও আল্লাহর রহমতের আশা হারাবে না (ক্ষমা করা হবে না ভেবে গুনাহ থেকে ক্ষমা চাওয়া থেকে কখেনো বিরত থাকবে না)। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ  ক্ষমা করে দেবেন। নিঃসন্দেহে তিনি পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। সূরা যুমারঃ ৫৩

আপনার জীবনে কোনো বড় চ্যালেঞ্জ বা সমস্যা আছে, অথবা খুব বড় কোনো অসুবিধা কি আপনাকে ঘিরে ফেলেছে?

প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সৃষ্টির মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ। তিনি পর্যন্ত এই পৃথিবীতে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন এবং আমাদের জানিয়ে গেছেন যে, কঠিন পরিস্থিতিতে আমাদেরকে সবর করতে হবে। সবর অর্থ আল্লাহ তাআলার নির্দেশের  ওপর অবিচল থাকা। যা-ই হোক না কেন অর্থাৎ সব পরিস্থিতে আমাদের প্রমাণ করতে হবে আমরা সর্বশক্তিমান আল্লাহর বান্দা। আমরা সম্পূর্ণরূপে তাঁর ওপর নির্ভর করে থাকি। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস এটিই যে, আমাদের সব দুশ্চিন্তা আর দুঃখগুলি কেবল তাঁর আদেশেই দূর হবে।

পার্থিব জীবন পরীক্ষা

আমরা এই পৃথিবীতে পরীক্ষায় আছি। আমাদেরকে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। আমার পরীক্ষা আপনার থেকে ভিন্ন। আপনার পরীক্ষা আমার থেকে ভিন্ন; এভাবে সবার পরীক্ষাক্ষেত্র ভিন্ন হয়ে থাকে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবই জানেন তিনি। সব বিষয়ে তাঁর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা সম্পূর্ণ (কাকে কেন কোন্ পরীক্ষায় ফেলছেন এটি তাঁর ইলমে রয়েছে!)।

পরীক্ষায় পড়ে হতাশ হয়ে ফেল করবেন না! প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের পার্থিব জীবন সম্পর্কে বারবার সতর্ক করেছেন- এখানে প্রতিটি জিনিসই ক্ষণস্থায়ী। এই পৃথিবীতে কেউ তার ইচ্ছা সম্পূর্ণরূপে পূরণ করতে সক্ষম হবে না।

বোকা লোকদের দাবি

কেউ যদি বলে বা দাবি করে, এই পৃথিবীতে আমি যা চেয়েছি তার সবই  অর্জন করে ফেলেছি আমি। এটা এক অদ্ভুত দাবি; বোকার লোকদের দাবি! এই পৃথিবীতে বসবাসকারী একজন মানুষও তার মৃত্যুর আগে সব ইচ্ছা পূরণ করতে পারেনি। তিনি তার কোনো না কোনো ইচ্ছা দুনিয়ায়তে রেখে  বিদায় নিয়েছেন। এটি এক অনস্বীকার্য সত্য যা যে ধর্মের মানুষই হোক না কেন বিশ্বাস করে থাকে।

এই জীবনটা কেমন হওয়া উচিত

আমাদের জীবন হতে হবে আত্মসমর্পণের। আমাদের সব বিষয় শুধুমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছেই সোপর্দ করা উচিত।

এমন কিছু নেই যা তিনি করতে পারেন না, তিনি সবই করতে সক্ষম। যদি আমাদের কোনো  প্রয়োজন হয়, তাহলে আমাদের তাঁর ওপর নির্ভর করে তাঁর কাছেই সেটি চাইতে হবে।

মহান আল্লাহর সুস্পষ্ট ঘোষণা:

وَاسْتَعِينُواْ بِالصَّبْرِ وَالصَّلاَةِ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلاَّ عَلَى الْخَاشِعِينَ

الَّذِينَ يَظُنُّونَ أَنَّهُم مُّلاَقُوا رَبِّهِمْ وَأَنَّهُمْ إِلَيْهِ رَاجِعُونَ 

অর্থ: সবর (আল্লাহর আদেশ-নিষেধের ওপর দৃঢ় থেকে) এবং সালাতের মাধ্যমে তাঁর সাহায্য চাও। নিঃসন্দেহে, বিনীত ব্যক্তি (খাঁটিভাবে আল্লাহকে ভয়কারী) ব্যতীত এটি কঠিন এক কাজ। (নম্র ব্যক্তিরা হল) যারা নিশ্চিত যে তারা তাদের রবের সঙ্গে সাক্ষাত করবে এবং তাদেরকে (ঈমান আমলের জবাবদিহিতার জন্য পরকালে) তাঁর কাছে (তাঁর সাক্ষাতে) ফিরে যেতেই হবে। সূরা বাকারাঃ ৪৫-৪৬

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: you are not allowed to select/copy content. If you want you can share it