বিবিধ প্রবন্ধ

ফেতনা: তার রূপ ও সে সময় করণীয়: ৯

আমরা সব সময় দেখব সালাফ, অর্থাৎ আমাদের পূর্বসূরি নেককারগণ কখন, কোন বিষয়ে, কী আমল করেছেন। তা থেকে বিচ্যুতি ও ব্যত্যয় হলেই বুঝতে হবে দ্বীনের সঠিক পথ থেকে আমরা সরে গিয়েছি।

ফেতনার ডামাডোল বেজে উঠলে সর্বসাধারণের মাঝে এক উত্তেজনা ও অতি-উৎসাহ মনোভাব তৈরি হতে দেখা যায়। একে যথাসম্ভব দাবিয়ে রাখতে হবে। এখানে প্রচুর সবর করতে হবে। মুমিন তার কথায় ও কাজে এমনিতেই সতর্ক থাকবে। আর স্পর্শকাতর সময়ে এর দাবি আরও বেড়ে যায়।

আমরা সাধারণত যা করি, তার মধ্যে আছে, তাড়াহুড়া করে কোনো পক্ষ নিয়ে নেয়া, ক্রমাগত নানারকম মন্তব্য ছুঁড়তে থাকা ও ব্যাপক বিচার-বিশ্লেষণ শুরু করে দেয়া। এর সম্পূর্ণ অথবা অনেকাংশই অহেতুক। অথচ, হাদীসে এমন সময়ে স্পষ্টভাবে ইবাদত তথা নেক আমলে বিশেষভাবে মনোনিবেশ করতে বলা হয়েছে। সুসংবাদ দেয়া হয়েছে যে, সেরকম দু:সময়ে ইবাদতে রত থাকা নবীজি ﷺ এর দিকে হিজরতের সমান। আরেক বর্ণনায় তাগিদ আছে ঘরের চট হয়ে থাকতে, অর্থাৎ, দীর্ঘ সময় ঘরে অবস্থান করতে।

উলামায়ে হক, যারা দ্বীনের সঠিক বুঝ রাখেন, তাদের উপেক্ষা করে চলা বড় ভয়ানক বিষয়। নিজেকে রীতিমত হুমকির সম্মুখে ফেলে দেয়া। শরীরের জটিলতা বুঝিনা বলে আমরা ডাক্তারের কাছে দৌড়াই, বাড়ি নির্মাণে বিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারে শরণাপন্ন হই। কিন্তু দেখুন, দ্বীনি বিষয়ে ও আখেরাতে নাজাতের বিষয়ে সেই সতর্কতা নেই। কত অবিবেচকের মত কাজ করে ফেলি আমরাই।

সালাফের আমল কখন কী ছিল, আমার সময়ে ফেতনা হলে, কুরআন-সুন্নাহর আলোকে করণীয় কী, এটা উলামায়ে হকই বলে দেবেন। তাদের থেকে জেনেই আমাকে নেক পথে চলতে হবে ও ফেতনার থেকে বাঁচতে হবে। বাঁচাবেন তো আল্লাহ তাআলাই। বাঁচানোর যে নিয়ম-নীতি কুরআন-হাদীসে আছে, তা জানার জন্যই তো দ্বীনের ধারক ও বাহকদের ছায়াতলে আশ্রয় নিতে হবে। শিশু যখন খেতে শেখে তখন তার সামনে রাখা টক, ঝাল, মিষ্টি – সব খাবারই সে ছোবল দিতে চায়। তার অভিভাবক তাকে যত্রতত্র ছোবল দেয়া ও সেগুলি খেয়ে ফেলা থেকে বাঁচায়। বেছে বেছে তার প্রয়োজন ও চাহিদা অনুপাতে খাইয়ে দেয়। ঠিক এভাবেই, আমাদের অবস্থাও দ্বীনকে জানার ও মানার বিষয়ে উলামায়ে হকের সামনে এমন।

Last Updated on February 4, 2023 @ 10:46 am by IslamInLife বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *